মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষে শত শত সহি হাদিস শরীফ থেকে কিছু হাদিস
শরীফ আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করছি |

রাহমাতুল্লিল আলামিন হুজুর পুর নূর ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই
নিজের মিলাদ পালন করেছেন |

★এই প্রসঙ্গে পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ
হয়েছে ,

 " ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﻗَﺘَﺪَﺓَ ﺍﻻَﻧْﺼﺎَﺭِﻯ ﺭَﺿِﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻨﻪُ ﺍَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺱﺀﻝ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡ ﺍﻻِﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻗَﻞَ ﺫَﺍﻙَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻓِﻴْﻪِ ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺍَﻭْﺍُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻓِﻴْﻪِ -

অর্থাৎঃ হযরত আবু কাতাদা ( রা ) হতে বর্ণিত ,
একজন সাহাবী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরজ
করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ , ইয়া হাবিবাল্লাহ
আমার মাতা পিতা আপনার নূরের পাক
কদমে কুরবান হোক | আপনি প্রতি সোমবার
রোজা পালন করেন কেন ?
জবাবে সরকারে দুজাহান নূরে মুজাসসাম
হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , এই
দিনে আমার জন্ম হয়েছে , এই
দিনে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফ এই দিনেই আমার উপর
নাজিল হয়েছে |

(সহীহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, ৮১৯ পৃষ্ঠা,
বায়হাকী: আহসানুল কুবরা, ৪র্থ খন্ড ২৮৬ পৃ:
মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম খন্ড ২৯৭ পৃ:
মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৪র্থ খন্ড ২৯৬পৃ:
হিলিয়াতুল আউলিয়া ৯ম খন্ড ৫২ পৃ:)

বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকারী আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী , ইমাম বদরুদ্দিন
আইনি বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় লিখেন ,

ﻭﺫﻛﺮ ﺍﻟﺴﻬﻴﻠﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ ﻣﺎﺕ ﺍﺑﻮ ﻟﻬﺐ ﺭﺍﻳﺘﻪ ﻓﻲ
ﻣﻨﺎﻣﻲ ﺑﻌﺪ ﺣﻮﻝ ﻓﻲ ﺷﺮ ﺣﺎﻝ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﻟﻘﻴﺖ ﺑﻌﺪ
ﻛﻢ ﺭﺍﺣﺔ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ﻳﺨﻔﻒ ﻋﻨﻲ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﺛﻨﻴﻦ ﻭﺫﻟﻚ ﺍﻥ
ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻟﺪ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺛﻮﻳﺒﺔ
ﺑﺸﺮﺕ ﺍﺑﺎ ﻟﻬﺐ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩ ﻓﺎﻋﺘﻘﻬﺎ

অর্থাৎ হযরত আব্বাস ( রা ) বর্ণনা করেন , " আবু
লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর
আমি তাকে স্বপ্নে দেখি |
সে আমাকে বলে ভাই আব্বাস আমার মৃত্যুর পর
থেকে কবরের
জিন্দেগীতে আমি শান্তিতে নেই | কিন্তু
প্রতি সোমবার এলেই আমার শাস্থি লাগব
করে দেওয়া হয় | এই
ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে হযরত আব্বাস ( রা )
বলেন আবু লাহাবের এই সোমবারের
শাস্তি লাগবের কারণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ
উপলক্ষে হুজুর যেদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন
নবীজির শুভাগমনে খুশি হয়ে হযরত
সুয়াইবা ( রা ) আজাদ করে ছিলেন |
(ফাতহুল বারি সরহে সহীহুল বুখারী ,  )

এখন কথা হলো আবু লাহাবের মত
কাট্টা কাফের যদি নবীজির একদিনের
বেলাদত শরীফে খুশি হয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতি সোমবার
তার জাহান্নামের আজাব লাগব হয়ে যায় ,
আমরা যারা মুমিন মুসলমান
তারা জীবনে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কতগুলা বেলাদত
শরীফ খুশি মনে পালন করে তার
বিনিময়ে কি জান্নাত পেতে পারিনা ?

★এই প্রসঙ্গে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস
বিশারদ অলিয়ে কামেল শায়খ আব্দুল হক
মহাদ্দেসে দেহলভী ( রহ ) বলেন ,

ﻣﻦ ﻋﻈﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺑﻤﺎ ﺍﻣﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻌﻈﻴﻢ ﻭﺍﻻﻛﺮﺍﻡ ﻛﺎﻥ ﻣﻦﺍﻟﻔﺎﺀﺯﻳﻦ ﺑﺪﺍﺭ ﺍﻟﺴﻼﻡ

অর্থাৎঃ যারা হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিলাদত শরীফকে সম্মান ও তাজিম
করবে এবং খুশি মনে পালন করবে সে চির
শান্তির জায়গা জান্নাতের
অধিকারী হবে |

(মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খন্ড,
খুত্বায়ে ইবনে নাবাতা) |

অতএব হাদিস শরিফ থেকে মহা পবিত্র ঈদ উল
আজম ঈদ ই মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বৈধতা স্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো , এরপরও
যদি কেউ পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিপক্ষে কথা বলে , বেদাতের ফতুয়া দেয়
বুঝতে হবে সে হয়তো অন্ধ , মুর্খ নতুবা মুনাফেক
রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত শত্রু |
কেননা অন্ধ আর মূর্খর পক্ষে হাদিস পড়া সম্ভব
না আর মুনাফেক ছাড়া কেউ রাসুল পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শান
মান তথাপি উনার পবিত্র
জন্মদিনকে অস্বীকার করতে পারেনা !


হযরত আল্লামা জালাল উদ্দীন
সূয়ুতী রাহিমামুল্লাহ আলাইহি যার সনদ সহ
প্রায় ২ লক্ষ হাদিস শরীফ মুখস্থ ছিল সেই
তাজুল মুফাস্সিরীন মোহাদ্দেস মুসান্নিফ
সুয়ুতি রাহিমামুল্লাহ আলাইহি তিনি উনার
বিখ্যাত কিতাব " সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা আলাইহি ওয়া সাল্লাম
" এ দুই খানা সহি হাদিস শরীফ বর্ণনা করেছেন |
পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে "

ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻢُ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِ ﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَ ﺍَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُ ﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَ ﻟَﻚَ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﻓِﻌْﻠَﻚَ ﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚ

অর্থাৎঃ হযরত আবু দ্বারদা ( রা ) হতে বর্ণিত ,
হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন হযরত আমির
আনসারী ( রা ) এর গৃহে গেলেন এবং হুজুর
দেখতে পেলেন আমির আনসারী ( রা ) উনার
পরিবার পরিজন ও আত্বীয় স্বজনদের
নিয়ে একত্রিত হয়ে খুশি মনে রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিলাদত শরীফ পাঠ করছেন | অর্থাৎ
নবীজি এইদিনে পৃথিবীতে আসছেন ,
পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মাখলুক আনন্দিত
হয়েছে ইত্যাদি | এই ঘটনা শ্রবণ করে হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত
আনন্দিত হয়ে হযরত আমির আনসারীকে বললেন ,
আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের
দরজা প্রশস্থ করেছেন এবং সমস্থ ফেরেস্থাগন
আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন |
যে আপনার জন্য এইরূপ কাজ করবে সেও আপনার
মত নাজাত ( ফজিলত ) লাভ করবে | ( সুবহান আল্লাহ )

পবিত্র হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে "

ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻰْ ﺑَﻴْﺘِﻪٖ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭْﻥَ ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ

অর্থাৎঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রা )
নিজেই বর্ণনা করেন , একদা তিনি উনার
গৃহে সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে একত্রিত
হয়ে হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ
পাঠ করছিলেন | ( এই দিনে হুজুর
পৃথিবীতে আসছেন , স্বয়ং আল্লাহ উনার
হাবিবের উপর দুরুদ সালাম দিয়েছেন )
শ্রবন্কারীরাও তা শুনে আনন্দ পাচ্ছিলেন |
ঠিক ওই সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত
হয়ে বললেন , "তোমাদের জন্য আমার
শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে " এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে যেমন : (মাওলুদুল কবীর , আত
তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান
নাযার , হকিকতে মোহাম্মদী ( মিলাদ
অধ্যায় ), দুররুল মুনাজ্জাম , ইশবাউল কালাম |
অতএব উপরোক্ত সহি হাদিসের
মাধ্যমে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের বৈধতা প্রমানিত
হলো , এরপরও যদি কেউ পবিত্র
মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিপক্ষে কথা বলে , বেদাতের ফতুয়া দেয়
বুঝতে হবে সে হয়তো অন্ধ , মুর্খ নতুবা মুনাফেক
রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত শত্রু |
কেননা অন্ধ আর মূর্খর পক্ষে হাদিস পড়া সম্ভব
না আর মুনাফেক ছাড়া কেউ রাসুল পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শান
মান তথাপি উনার পবিত্র
জন্মদিনকে অস্বীকার করতে পারেনা !

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন Blogger

 
Top