নবীগনের যুগে মিলাদুন্নবী:
★১। হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর যুগে মিলাদ প্রত্যেক নবী নিজ নিজ যুগে আমাদের প্রিয়নবী ও আল্লাহর প্রিয় হাবিব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর আবির্ভাবের সুসংবাদ দিয়ে গেছেন | হযরত আদম আলাইহিস সালাম তাঁর প্রিয় পুত্র ও প্রতিনিধি হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে নুরে মুহাম্মদী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তাজিম করার জন্য
নিম্ন অসিয়ত করে গেছেন |
★★আনুবাদ অংশ টি নিম্নে বর্ননা করা হলোঃ
[" আদম আলাইহিস সালাম আপন পুত্র হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে লক্ষ্য করে বললেন : হে প্রিয় বৎস , আমার পরে তুমি আমার খলিফা | সুতরাং এই
খেলাফত কে তাকওয়ার তাজ ও দৃঢ় একিনের দ্বারা মজবুত করে ধরে রেখো | আর যখনই আল্লাহর নাম ঝিকির (উল্লেখ) করবে তাঁর সাথেই মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামও উল্লেখ করবে |
তাঁর কারন এই : আমি রূহ ও মাটির মধ্যবর্তী থাকা অবস্থায়ই তাঁর পবিত্র নাম আরশের পায়ায় (আল্লাহর নামের সাথে ) লিখিত দেখেছি | এরপর আমি সমস্ত আকাশ ভ্রমন করেছি | আকাশের এমন কোন স্থান
ছিলনা যেখানে মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম অন্কিত পাইনি? আমার রব আমাকে বেহেস্তে বসবাস করতে দিলেন | বেহেস্তের এমন কোন
প্রাসাদ ও কামরা পাইনাই যেখানে মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ছিলনা ? আমি মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম আরোও
লিখিত দেখেছি সমস্ত হয়রদের স্কন্ধ দেশে , বেহেস্তের সমস্ত বৃক্ষের পাতায় , বিশেষ করে তুলা বৃক্ষের পাতায় পাতায় , পর্দার কিনারায় এবং ফেরেসতাগনের চোখের
মনিতে ঐ নাম অন্কিত দেখেছি | সুতরাং হে শীস ! তুমি এই নাম বেশী বেশী করে জপতে থাক | কেননা ,
ফেরেস্তাগন পুর্ব হতেই এই নাম জপনে মশগুল রয়েছেন " [ জুরকানি শরীফ ] |
উল্লেখ্য যে সর্ব প্রথম দুনিয়াতে ইহাই ছিল জিকরে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম |
হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর মিলাদ
পাঠ ও কেয়াম :
হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এবং হযরত
ইসমাইল আলাইহিস সালাম যখন আল্লাহর ঘর
তৈরী করছিলেন , তখন ইব্রাহীম আলাইহিস
সালাম উক্ত ঘরের নির্মাণ কাজ কবুল করার
জন্য নিজের ভবিষ্যৎ সন্তানাদিদের মুসলমান
হয়ে থাকার জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ
করার পর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বা কেয়াম
করে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর আবির্ভাব আরবে ও হযরত ইসমাইলের
বংশে হওয়ার জন্য এভাবে দোয়া করেছেন |
অর্থাৎ হে আমার রব ! তুমি এই আরব
ভুমিতে আমার ইসমাইলের বংশের
মধ্যে তাদের মধ্যে হতেই সেই মহান
রাসুলকে প্রেরণ করো- যিনি তোমার আয়াত
সমুহ তাদের কাছে পাঠ করে শুনাবেন ,
তাদেরকে কোরআন সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান
শিক্ষা দেবেন এবং বাহ্যিক ও আত্বিক
অপবিত্রতা থেকে তাদের পবিত্র করবেন |
[সুরাহ আল বাকারা ১২৯ আয়াত ]
এখানে দেখা যায় হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস
সালাম রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪০০০ বৎসর পুর্বেই
মুনাজাত আকারে তাঁর আবির্ভাব , তাঁর
সারা জিন্দেগীর কর্ম চাঞ্চল্য ও মাণুষের
আত্বার পরিশুদ্ধির ক্ষমতা বর্ননা করে হুজুর
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর
মিলাদের সারাংশ পাঠ করেছেন এবং এই
মুনাজাত বা মিলাদ দন্ডায়মান অবস্থাই
করেছেন যা পুর্বের দুটি আয়াতের
মর্মে বুঝা যায় |
ইবনে কাছির তাঁর বেদায়া ও
নেহায়া গ্রন্থে ২য় খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠায়
লিখেছেন " দোয়া ইব্রাহিমু
আলাইহি ওয়া সাল্লামু ওয়াহুয়া কায়েমুন
"অর্থাৎ উক্ত দোয়া করার সময় ইব্রাহীম
আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান ছিলেন |
নবী করিম ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেণ " আনা দুয়াওতু
ইব্রাহীমা " আমি হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস
সালাম এর দোয়ার ফসল |" হযরত ইব্রাহীম
আলাইহিস সালাম আল্লাহর নিকট
থেকে চেয়ে আমাদের প্রিয়
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে আরবের ইসমাইল আলাইহিস সালাম এর
বংশে নিয়ে এসেছেন | এটা উপলব্ধির বিষয় |
আশেক ছাড়া এ মর্ম অন্য কেউ বুঝবে না |
বর্তমান মিলাদ শরীফে রাসুলে পাঁকের
আবির্ভাবের যে বর্ননা দেয়া হয় তা হযরত
ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর দোয়ার
তলনায় সামান্যতম অংশ মাত্র |
সুতরাং আমাদের মিলাদ শরিফ পাঠ ও
কেয়াম হযরত ইব্রাহীম আলাহিস সালামেরই
সুন্নাত । [ বেদায়া ও নেহায়া ২য় খন্ড ২৬১পৃষ্ঠ ]
হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নবী করীম (সা)
এর মিলাদ পাঠ ও কেয়াম:
নবী করিম ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ৫৭০ বৎসর
পুর্বে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আবির্ভাব
| তিনি তাঁর উম্মত হাওয়ারী ( বনি ইসরাইল )
কে নিয়ে নবী করিম ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিলাদ শরীফ পাঠ
করেছেন | উম্মতের
কাছে তিনি আখেরী জামানার পয়গম্বর
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ও
সানা সিফাত এবং আগমন
বার্তা এভাবে বর্নণা করেছেন : অর্থাৎ "
হে আমার প্রিয় রাসুল ! আপনি স্বরণ করে দেখুন
ঐ সময়ের কথা যখন মরিয়মেম
তনয়া ঈসা আলাইহিস সালাম বলেছেন :
হে বনী ইসরাইল , আমি তোমাদের
কাছে নবী হয়ে প্রেরিত হয়েছি |
আমি আমার পুর্ববর্তী তওরাত কিতাবের
সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং এমন এক মহান
রাসুলের সুসংবাদ দিচ্ছি যিনি আমার
পরে আগমন করবেন এবং তাঁর নাম হবে আহমদ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
[ সুরা আছ- ছফ ৬ আয়াত ]
হযরত ঈসা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর ভাষন সাধারনত দন্ডায়মান হতো আর এটাই
ভাষনের সাধারন রীতি ও বতে |
ইবনে কাছির বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থের ২য়
খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠয় উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়
লিখেছেন : " আখাতোবা ঈসা আলাইহেস
সালামু উম্মাতাহুল হাওয়ারিইনা কায়েমা"
" অর্থৎ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান
(কেয়াম) অবস্থায় তাঁর উম্মৎ
হাওয়ারীদেরকে নবীজীর আগমনের সুসংবাদ
দিয়ে বক্তৃতা করেছেন " | সুতরাং মিলাদ ও
কিয়াম হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর
সুন্নাত এবং নবীযুগের ৫৭০ বৎসর পুর্ব হতেই |
[ বেদায়া ও নেহায়া ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন Blogger Facebook