তালামীয নিউজ ২৪ঃঃআমাদের সামনে যে মাস আসছে, তা হজ্জের মাস যিল-হজ্জ। কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফে এই মাসের প্রথম দশ দিনের অনেক ফদ্বীলত বর্ণিত হয়েছে। আমরা এই দশ দিন সম্পর্কে বহুলাংশেই অসচেতন। আল্লাহ তা’আলা এই দশ রাত্রির কসম করেছন। আল্লাহ তাআলা যেসব বিষয়ের কসম করেছেন সেসকল বিষয় ইহকালীন অথবা পরকালীন জীবনে কোন না কোন গুরুত্ব বহন করে। আল্লাহ তাআলা সূর্যের শপথ করেছেন, চন্দ্রের শপথ করেছেন, তারকারাজির শপথ করেছেন। মক্কা মুর্কারামার শপথ করেছেন, কুরআন শরীফের শপথ করেছেন। তেমনিভাবে এই দশ রাত্রিরও শপথ করেছেন। والفجر * وليال عشر ফজরের শপথ, আর দশ রাত্রির শপথ। (সূরা ফজর, আয়াত : ১-২)
এই দশ রাত্রিতে বেশি বেশি নফল আমল করার বর্ণনা হাদীস শরীফে পাওয়া যায়। মুসনাদে আহমদে বর্ণিত আছে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন-
ما من أيام أعظم عند الله ، ولا أحب إلى الله العمل فيهن من أيام العشر ، فأكثروا فيهن من التسبيح ، والتحميد ، والتهليل ، والتكبير.
-এই দশ দিনের মর্যাদার সমতুল্য এবং এই দশ দিনের আমল অপেক্ষা অধিক প্রিয় আমল আল্লাহর কাছে নেই। সুতরাং তোমরা এই দিন সমসূহে অধিক পরিমাণে তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল এবং তাকবীর পড়।
এই দশ রাত্রির এতো মর্যাদার কারণ হিসাবে উলামায়ে কিরাম বলেন এই সময়ের মধ্যে সকল আমল করা যায়। নামায, রোযা যাকাত, সদকাহ সব আমল অন্য সময়ে করা যায় কিন্তু কুরবানী, হজ্জ করা যায় না। আর এই দশ দিনের মধ্যে নামায, রোযা, যাকাতের সাথে সাথে কুরবানী ও হজ্জ সহ অন্যান্য সকল ইবাদত করা যায়। সে জন্যে এর মর্যাদা আলাদা। এ রাতসমূহে আমরা নিম্নলিখিত আমল করতে পারি।
বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করা ঃ এ সময়ে যিকর করার জন্য সরাসরি কুরআন শরীফের নির্দেশনা পাওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ
-তোমরা নির্দিষ্ঠ দিনসমূহে আল্লাহর নামের যিকর করো। জমহুর মুফাস্সিরীনের মতে এই আয়াত দ্বারা যিলহজ্জের প্রথম দশ দিনকে বুঝানো হয়েছে।
রোযা রাখা ঃ যিলহজ্জের প্রথম দিন থেকে নবম দিন পর্যন্ত আমরা রোযা রাখতে পারি। রাসূল (সা.) এই সময়ে রোযা রাখতেন। উম্মুল মুমিনীন হযরত হাফসা (রা.) বলেন
أربع لم يكن يدعهن رسول الله صلى الله عليه وسلم صيام يوم عاشوراء والعشر وثلاثة أيام من كل شهر والركعتين قبل الغداة.
-রাসূল (সা.) চারটি জিনিস কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোযা, দশ রাত্রির রোযা, প্রত্যেক মাসে তিনটি রোযা আর সকালের দুই রাকাআত নামায (ফজরের সুন্নত)।
রাত জেগে ইবাদত করাঃ যিলহজ্জের দশ রাত্রিসমূহে রাত জেগে ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। হযরত সাঈদ ইবন জুবায়র (রা.) বলেন لاَ تُطْفِئُوا سُرُجَكُم لَيَالِيَ العَشْرِ
-তোমরা দশ রাত্রিতে তোমাদের ঘরের বাতি সমূহ নিভিয়ে ফেলো না।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই সময়ের যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন