তালামীয নিউজ ২৪ ডেস্কঃ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বৈধ বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে এ রায় দেয়। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন-বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই আজ এ রায় এলো।রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানির দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে আবারো সংগঠিত হচ্ছিল হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো। এরই মধ্যে তারা একাধিক কর্মসূচিও দিয়েছে।একই ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামীর ডাকে আজ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হচ্ছে।
আলোচিত এ মামলাটি শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছিল আদালত। আজ শুনানি শেষে আদালতের এ রায় এলো। এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত একই সঙ্গে এই মামলায় আইনী সহায়তাকারী হিসেবে ১৪ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ওই দিন আদালতে ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক ছিলেন।এর আগে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনকালে কার্যত বিরোধী দলবিহীন চতুর্থ জাতীয় সংসদে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন হয়। তবে ৯০ ভাগ মুসলিমের এ দেশে এটি সমাজে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয় বলে ইসলামপন্থীদের দাবি।
এরশাদের আমলে সংশোধিত সংবিধানের সাথে পরে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২ (ক) যুক্ত হয়। ২ (ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।
এরশাদের আমলের সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নানা ধর্মবিশ্বাসের মানুষ বাস করে। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্যান্য ধর্মকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক।’
তার ২৩ বছর পর রিট আবেদনকারী পক্ষ ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করে। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিনই তৎকালীন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দিয়েছিল।
রুলে সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে ২ (ক) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বে আইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনকীরীদের অপর একটি আবেদনে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। পরে ওই রুল শুনানির জন্য আদালতের নজরে নেওয়া হলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর এই বেঞ্চ ২৭ মার্চ দিন ধার্য্য করেছিলেন। পরে পরিবর্তি সময় অনুযায়ী সোমবার এই শুনানি হয়।
 
Top