মাওঃ আব্দুল বাছিত আশরাফ

পবিত্র রজব ও রামাদানের
মধ্যবর্তী মাসের নাম
শাবান। ফযিলতের দিক
থেকে রামাদানের পর-ই
শাবানের মার্যাদা। আর শাবান
মাসের মধ্যবর্তী রাতকে
বলা লাইলাতুল বরাত তথা
শবেবরাত। রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকে
অধিক মার্যাদাপূর্ণ মাস
হিসেবে আখ্যায়িত
করেছেন।
শাবান মাসের ফজিলত
শাবান শব্দের অর্থ -
ছড়ানো। শবে বরাত শব্দটি
আরবি ও ফার্সি মিশ্রিত শব্দ।
আরবীতে বলা হয়
লাইলাতুল বরাআত, শব বা
লাইলাতুন অর্থ রজনী,
বরাআত অর্থ ভাগ্য, অর্থাৎ
এক কথায় যার অর্থ দাড়ায়
ভাগ্য রজনী। হাদিস
শরীফের ভাষায় এই
রাতকে বলা হয়, অর্থাৎ
শাবানের মধ্য রাত্রি।
এ মাসে বিশেষ করে
শাবানের মধ্যরাতে বান্দা
আল্লাহর সমীপে আকুতি
মিনতি করে তার সমূদয় গুনাহ
থেকে মাফি চায় এবং নেক
আমলের দিকে ধাবিত হয়।
হযরত আনাস ইবনে মালিক
(রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন: রজব
অন্যান্য মাসের মধ্যে
শ্রেষ্ট। যেমন- পবিত্র
কুরআন অন্যান্য কিতাবের
মধ্যে শ্রেষ্ট। এ মাসের
গুরুত্ব বিবেচনা করে রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ২/১ দিন ছাড়া প্রায়
পুরোমাসই রোযা
রাখতেন। রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন : রজব আল্লাহর
মাস, শাবান আমার মাস এবং
রামাদান আমার উম্মতের মাস।
এ হাদিস থেকে শাবান মাস
সম্পর্কে ধারণা করা যায়- তা
কতটুকু গুরুত্বের দাবী
রাখে। শুধু তাই নয় বরং রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এই বলে দোয়
করতেন : ‘আল্লাহুম্মা
বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান,
ওয়া বাল্লিগনা রমাদ্বান।’
অনুবাদ- হে আল্লাহ রজব ও
শাবানকে আমাদের জন্য
বরকতময় কর এবং
আমাদেরকে রামাদ্বান
মাসে পৌঁছে দাও।
শাবান মাসের ফযিলত
সম্পর্কে হযরত আয়েশা
(রা.) বলেন: রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) গোটা শাবান মাস
রোযা রাখতেন। তিনি
বলেন একদিন আমার এক
প্রশ্নের জবাবে রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন: শাবান মাসে
প্রতি বছরের মৃতদের
তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
আমার মন চায় রোযাদার
অবস্থায় সে তালিকায় আমার
নাম লেখা হোক,
(সুবহানাল্লাহ)।
পবিত্র শাবান মাসের গুরুত্ব
অনুধাবন করে সাহাবায়ে
কেরামগণ বেশি বেশি
করে নেক আমল
করতেন এবং তাদের
অন্যান্য কাজ সঠিকভাবে
আনজাম দিতেন। হযরত
আনাস ইবনে মালিক (রা.)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর প্রাণ প্রিয়
সাহাবীগণ শাবান মাসের চাঁদ
দেখে পবিত্র কুরআনুল
কারীম বেশি বেশি করে
তেলাওয়াত করতেন।
মুসলমানগণ নিজের সম্পদ
হতে যাকাতের মাল পৃথক
করে ফেলতেন। যাতে
গরীব ও মিসকীনগণ
উপকৃত হতে পারে এবং
বরকতময় রমাদানের রোযা
রাখার জন্য তা তাদের ওয়াছিলা
হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা এ
মাসে তাদের কর্জ
পরিশোধ করে
ফেলতেন। এবং অন্যদের
নিকট থেকে তাদের
প্রাপ্য আদায় করে নিতেন।
রামাদান মাসের চাঁদ দেখে
লোকেরা গোসল করে
ইতিকাফে বসে যেতেন।
(গুনিয়াতুত তালেবীন, পৃষ্ঠা:
৩৫৬)।
হযরত আনাস (রা.) বলেন:
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর নিকট জানতে
চাওয়া হল যে কোন
রোযা উত্তম? উত্তরে
তিনি বলেন: শাবানের
রোযা। কারণ এই রোজা
রমজানের রোজার
সম্মাণের জন্য।
অন্য হাদিসে এসেছে-
হযরত আয়েশা (রা.) বলেন:
যে ব্যক্তি শাবান মাসের
শেষ সোমবার রোজা
রাখবে আল্লহপাক তার
গুনাহসমূহ ক্ষমা করে
দিবেন।
শবেবরাতের ফযিলত
হা-মীম, ইহা সুস্পষ্ট
কিতাবের শপথ, নিশ্চয়ই আমি
এই কিতাব (কুরআন শরীফ)
নাযিল করেছি বরকতময়
রজনীতে। নিশ্চয়ই আমি
সতর্ককারী। এই
রজনীতে প্রত্যেক
হিকতম পূর্ণ বিষয়ের
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। (সুরা
দুখান, আয়াত: ১-৪)।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায়
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
আব্বাস (রা.) বলেন: হা-
মীম-দ্বারা এই সমস্ত
বিষয়সমূহকে বুঝানো
হয়েছে, যা কিয়ামত পর্যন্ত
স্থায়ী থাকবে। এরপর
আল্লাহ পাক তাঁর কুরআনের
শপথ করে বলছেন যে,
আমি এই কিতাবকে এক
মোবারক রাতে অবতীর্ণ
করেছি। এই মোবারক রাতটি
হলো শাবান মাসের
মধ্যবর্তী রাত।
মুমিন জননী হযরত
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন: আমি মহানবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে বলতে
শুনেছি, এমন চারটি রাত
রয়েছে, যাতে আল্লাহ
তাআলা সকল মানুষের উপর
নেকীর দরজা খুলে
দেন। এগুলো হচ্ছে-
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আদ্বহা,
শাবানের মধ্যবর্তী রাত ও
আরাফাতের রাত।
এগুলোতে আল্লাহ তাআলা
মানুষের বয়স, রিযিক ও
হজ্জ্বের ব্যাপারে
নির্দেশনাদি লিপিবদ্ধ করে
দেন। (গুনিয়াতুত
তালেবীন, পৃষ্ঠা: ৩৬২)।
এ রাতে আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন অসংখ্য
পাপীকে ক্ষমা করেন
এবং দুনিয়ার প্রথম আসমানে
অবতরণ করেন। হযরত
আয়েশা (রা.) বলেন: রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন,
শাবানের ১৫ তম রাত্রিতে
(১৪ শাবান দিবাগত রাতে)
জাগ্রত থাক এবং দিনে
রোযা রাখ। কেননা উক্ত
রাতে সন্ধ্যা থেকে
আল্লাহ পাক দুনিয়ার আকাশে
অবতরণ করেন এবং বলেন
‘ কেউ কি আছ ক্ষমা
প্রার্থনাকারী? আমি ক্ষমা
করে দিব। কেউ কি আছ
রিযিক প্রার্থনাকারী? আমি
তাকে রিযিক দেব। কেউ
কি আছ বিপদগ্রস্ত? আমি
তাকে বিপদমুক্ত করে দিব।
এভাবে মানুষের
প্রয়োজন ও সমস্যা কথা
উল্লেখ করে তাঁর
দরবারে প্রার্থনা করার জন্য
আল্লাহ পাক ফজর পর্যন্ত
আহবান করতে থাকেন।
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায়
আল্লামা আব্দুল হক
মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাহ.)
বলেন: আল্লাহপাক
প্রতিরাতেই দুনিয়ার আকাশে
অবতরণ করেন এবং শেষ
রাতে অবতরণ হন। কিন্তু
শবেবরাতের সন্ধ্যা
থেকে আল্লাহ পাক দুনিয়ার
আকাশে অবতীর্ণ হন।
এ রাতে আল্লাহ পাক কিছু
সংখ্যক মানুষকে ক্ষমা
করেন না, যদি না সে
খালিছভাবে তওবা না করে।
এ সম্পর্কে হযরত আলী
(রা.) হতে বর্ণিত আছে
যে, হুজুর (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ
করেন: শাবানের
মধ্যবর্তী রাতে দুনিয়ার
আকাশে আল্লাহ তাআলার
নির্দেশ পৌছানো হয়। এ
রাতে সকল মুসলমানগণকে
ক্ষমা করে দেন। কিন্তু
মুশরিক, হিংসুক আত্মীয়তার
সম্পর্কচ্ছেদকারী এবং
ব্যভিচারকে ক্ষমা করেন
না। (গুনিয়াতুত তালেবীন,
পৃষ্ঠা: ৩৫৯)।
আবু মুসা আশআরী (রা.)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর কাছ থেকে
বর্ণনা করেছেন। তিনি
ইরশাদ করেছেন যে,
মধ্য শাবানের রাত্রে
(শবেবরাতে) আল্লাহপাক
মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া
সৃষ্টিকুলের সবাইকে মাফ
করে দেন। (ইবনে মাজাহ
শরীফ, বাব-১৯১, হাদীস:
১৪৫৩, পৃষ্ঠা: ২০২)।
শাবানের রোযার রয়েছে
সীমাহীন বরকত ও
ফযিলত। হযরত আনাস (রা.)
থেকে বর্ণিত আছে
যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে
জিজ্ঞাস করা হলো, রোযা
সমূহের মধ্যে উত্তম
রোযা কোনটি? মহানবী
(সা:) জবাবে বললেন:
শাবানের রোযা। তিনি
আরো বললেন: শাবানের
রোযা তো পবিত্র
রমজানের সম্মানার্থে রাখা
হয়।
উম্মুল মুমিনীন হযরত
আয়েশা সিদ্দীকা (রা.)
থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন: একদা (রাতে) আমি
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে খুঁজে না
পেয়ে তাঁর সন্ধানে
বেরিয়ে পড়লাম। যখন তিনি
জান্নাতুল বাকীতে মাথা
মুবারক আকাশের দিকে
উত্তেলিত করা অবস্থায়
ছিলেন। (অর্থাৎ মুর্দাগণের
জন্য দোয়া করছিলেন)
তিনি আমাকে বললেন: তুমি
কি আশংকা কর যে, আল্লাহ
ও তাঁর রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমার
সাথে অবিচার করবেন?
আমি আরয করলাম ইয়া
রাসুলুল্লাহ! আমি ভাবছিলাম
আপনি অন্য কোন
পত্নীর গৃহে হয়তো বা
তাশরীফ নিয়েছেন।
নবীজী ইরশাদ করলেন:
শাবানের মধ্যবর্তী রাতে
আল্লাহপাক দুনিয়ার আসমানে
অবতরণ করেন। অত:পর
কালব গোত্রের বকরীর
পশমের চেয়েও অধিক
সংখ্যক মানুষদের ক্ষমা
করে দেন। (জামীউত
তিরমিযী, বাব-৩৯,
হাদীস-৭৪৪, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা:
২০৭/ ইবনে মাজাহ শরীফ,
বাব-১৯১, হাদীস: ১৪৫২,
পৃষ্ঠা: ২০২)।

শবেবরাত সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের অভিমত:
পবিত্র শবেবরাত
সম্পর্কে সাহাবায়ে
কেরামদের অনেক
অভিমত কিতাবাদিতে পাওয়া যায়্
নিম্নে কয়েকটি বর্ণনা
তুলে ধরা হল।
সাহাবাগণের মধ্যে
সবচেয়ে হাদিস
বর্ণনাকারীর মধ্যে
একজন হলেন হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
(রা.)। শবেবরাত সম্পর্কে
তাঁর অভিমত হচ্ছে- হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
(রা.) থেকে বর্ণিত। (তিনি
বলেছেন), শবেবরাতে
সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত
গৃহীত হয়। আর
শবেকদরে দায়িত্বশীল
ফিরিশতাগণকে (কার্যকর
করার করার জন্য) বুঝিয়ে
দেয়া হয়। (সুত্র:
তাফসীরে রুহুল
মাআনী-২৫:১৩)।
ইমাম ইবনে রাজাব হাম্বলী
(রাহ.) বলেন- হযরত কা’ব
(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন: শাবান মাসের
মধ্যবর্তী রাতে
(শবেবরাতে) আল্লাহ
তাআলা জান্নাতকে সজ্জিত
করার আদেশ দিয়ে
জিবরাঈল (আ:) কে
সেখানে পাঠান। তিনি
বলেন: আজকের এ
রাতে আল্লাহ তাআলা
আকাশের তারকারাজি, দুনিয়ার
দিন ও রাত, গাছের পত্র-
পল্লব আর পাহাড় সমূহের
ওজন পরিমাণ বালুকারাশির
সমপরিমাণ মানুষকে জাহান্নাম
থেকে মুক্তি দেন।
(সুত্র: লাতাইফুল মাআরিফ,
পৃষ্ঠা: ২৬৩)।
এ রাতে কি হয়?
এ সম্পর্কে হযরত
আয়েশা (রা.) নবী করীম
(সা:) থেকে বর্ণনা
করেন, নবী করীম
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন: হে
আয়েশা! এ রাতে
(শবেবরাতে) কী হয়
জানো? হযরত আয়েশা
(রা.) জিজ্ঞেস করেন ইয়া
রাসুলুল্লাহ! এ রাতে কি হয়?
নবীজী বলেন: এ
রাতে আগামী বছর যত শিশু
জন্ম নিবে এবং যত লোক
মারা যাবে তাদের তালিকা
প্রস্তুত করা হয়। মানুষের
বিগত বছরের আমল মহান
আল্লাহর দরবারে পেশ
করা হয়। এ রাতে মানুষের
রিযিক অবতীর্ণ করা হয়।
(মিশকাত শরীফ: ১/১১৫)।
হযরত আতা ইবনে ইয়াসার
(রা.) বলেন: ১৪ শাবান রাতে
মৃত্যুর দায়িত্বে নিয়োজিত
ফেরেশতা আজরাঈল (আ:)
কে আল্লাহ তাআলার পক্ষ
থেকে একটি তালিকা দিয়ে
এই তালিকায় যাদের নাম
রয়েছে, তাদের প্রাণ
হরণের নির্দেশ দেয়া হয়।
এদের কেউ তো
বাগানে বৃক্ষরেপাণ করতে
থাকে, কেউ প্রাসাদ নির্মাণ
করে অথচ আগামী বছর
যারা মৃত্যুবরণ করবে,
তাদের তালিকায় তার নাম
লেখা হযে় গেছ।
উপরোক্ত হাদিসগুলো
থেকে বুঝে আসে, ১৪
শাবান দিবাগত রাত (শবেবরাত)
ভাগ্যরজনী বটে। এ
রাতে আগামী ১৪ শাবান
পর্যন্ত এক বছরের ভাগ্য
নির্ধারিত হয়। জীবন-মরণ,
সুখ-দু:খ, বিপদাপদসব কিছুই
চুড়ান্ত হয়।
পবিত্র শবেবরাতে
বর্জণীয় আমল
যে রাতে আল্লাহ পাক
ব্যাপক রহমত নাযিল করেন
সে রাতে যেন কোন
অপচয় অথবা ইসলাম সমর্থন
করে না-এমন কাজ যেন না
হয়। কিছু লোক সওয়াব
মনে করে নানা ধরণের
খারাপ কাজ করে থাকে তা
থেকে দূরে থাকা
আবশ্যক।
আতশবাজী
দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ
কিছু লোক এ রাতে
আতশবাজি করে থাকে। এত
অনেক টাকারও অপচয়
করে। এর সঙ্গে
ইসলামের কোন সম্পর্ক
নেই। বরং তাতে রয়েছে
গুনাহ। আতশবাজীতে
ইবাদতের কোন লাভ হয়
না। অনেক ক্ষেত্রে
আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষতি
সাধন হয় এবং প্রাণহানী
ঘটে। সাধারণ মুসলমানের
ইবাদতে বিঘ্ন ঘটে।
আলোকসজ্জা
শবে বরাতের রাতে
দালানকোঠা ও বড় বড়
ভবনে আলোকসজ্জা করা
হয়। যা অপচয়ের নামান্তর।
এ রাতে যেন আমরা
কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী
ইবাদতে কাটিয়ে দিতে পারি
সে দিকে খেয়াল রাখা
একান্ত দরকার।
এ রাতে আমল
শাবান মসের ১৪ তারিখ দিবাগত
রাতে কুরআন সুন্নাহনুযায়ী
যে সব আমল পাওয়া যা তা
আমরা পালন করব।
এ রাতে যে সব আমল করা যায়-
১. ১৪ শাবান দিবাগত রাতে
জাগরণ করে নফল ইবাদত
বন্দেগী, জিকির, আজকার,
কুরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ
ও মীলাদ শরীফের
মাহফিলে লিপ্ত থাকা।
২. এ রাতে বেশি বেশি
করে দোয়া করা। কেননা
এ রাতে প্রার্থনাকারীর
দোয়া কবুল করে
থাকেন।
৩. শবেবরাতের রাতে
সকল মুর্দেগাণের জন্য
দোয়া করা। তাদের কবর
যিয়ারত করা।
৪. এ রাতে মৃত ব্যক্তির
ঈসালে সওয়াবের
উদ্দেশ্যে কিছু দান খয়রাত
করা উত্তম।
৫. পনের শাবান রোযা রাখা
উত্তম। এ রোযায়
রয়েছে অনেক ফযিলত।
৬. শবেবরাতে (১৪ শাবান
দিবাগত রাতে) গোসল
করাও মুস্তাহাব।
বর্তমানে আমাদের
সমাজে অনেকে দাবী
করেন, শবেবরাতের
কোনো ফজিলত প্রমাণিত
নয়। কিন্তু এটা একটা মারাত্মক
ভুল। বাস্তব সত্য হচ্ছে,
শবেবরাতকে পবিত্র
রামাদ্বানের প্রস্তুতি
হিসেবে গ্রহণ করা।
ইবাদতের মাধ্যমে
শবেবরাতের সাওয়াব লাভ
করতে হবে। সারা বছরের
পর্যাপ্ত রিজিক এ রাতে
আল্লাহর দরবারে চাইতে
হবে। নিজেদের পাপ
মোচন করাতে হবে।
তওবা ইস্তিগফার করতে
হবে। আল্লাহ আমাদের
ভাগ্যে রমজান মাসের
রোযা নসিব করুন।
”আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা
ওয়া শাবান। ওয়া বাল্লিগনা
রামাদান।“
 
Top