স্টাফ রিপোর্টার, গোয়াইনঘাট ::  ঘাতক নুরুল ইসলাম তোয়াকুল ইউনিয়নের লক্ষীনগর গ্রামের ইদ্রিছ আলীর বড় পুত্র। ছয় ভাইয়ের মধ্যে বড় হওয়ায় পারিবারিক বিভিন্ন জায়-জামেলা তাকে পোহাতে হত। ৪/৫ মাস থেকে সে নিয়মিত নামাজা কালাম ও পড়ে। হঠাৎ দাড়ি রেখে তাবলীগে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার মা বাবাকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। হত দরিদ্র বাবা ভাত আনতে পানতা পুরায় কিভাবে তাবলীগে যাওয়ার জন্য তাকে টাকা দিবে। এ নিয়ে মা বাবার সাথে বাক বিতান্ডা হয়। এক পর্যায়ে ঘাতক নুরুল ইসলাম (২৫) তার ছোট ভাই আজিজুর রহমান (১০) ও মতিউর রহমান (৮) কে বেড়ানোর কথা বলে নৌকা নিয়ে পার্শ্ববর্তী মানান বিলে যায় এবং ঠান্ডা মাথায় ওই দুই ভাইকে গলা টিপে বিলের মধ্যে ফেলে আসে। 

ঘাতক নুরুল ইসলাম পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে। ঈদুল ফিতরের আগের দিন (৬ তারিখ) বুধবার দুপুর ২টায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় ঘাতক নুরুল ইসলাম। দুই ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ওই দিনই উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের মাটিকাপা গ্রামে তার এক আত্মীয়ের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। 

খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা তাকে গণ ধূলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। গত কয়েকদিন গোয়াইনঘাট থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকলেও ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। অবশেষে পুলিশ কঠোর ভাবে ঘটনার তথ্য জানতে চাইলে সে এ তথ্য প্রকাশ করে। এব্যাপারে ঘাতক নুরুল ইসলামকে আসামী করে তার পিতা ইদ্রিছ আলী গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ৫, তারিখ- ৯(৭)২০১৬ ইং। 

উল্লেখ্য পুলিশ চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পেয়ে স্থানীয় মানান বিল থেকে শনিবার সকাল ৯ টায় নিহত ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করে। রোববার সকাল ১০টায় ওই দুই শিশুর লাশের ময়না তদন্ত হয়। রবিবার বিকাল ৩টায় নিহত ওই শিশুর লাশ তার তাদের গ্রামের বাড়ীতে পৌছে এবং দাফন সম্পন্ন হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় গোয়াইনঘাট উপজেলাসহ সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা ঘাতক নুরুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন। 

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ দেলওয়ার হোসেন জানান, আপন ২ ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার করার অভিযোগে ঘাতক নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। তার পিতা মোঃ ইদ্রিছ আলী বাদী হয়ে নুরুল ইসলামকে আসামী করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যাহার নং - ৫, তারিখ- ৯(৭)২০১৬ ইং। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত মামলার আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 
 
Top