মাঝে মাঝে কবিতা আসে না।
কবিরা পাহাড়ের কাছে, সমুদ্রের
কাছে ছুটেন কবিতার সন্ধানে...।
জকিগন্জ উপজেলাধীন ফুলতলী ছাহেব
বাড়িতে গেলেই আমার কবিতা
লিখতে ইচ্ছা করে। ব্যক্তিগতভাবে
আমি এই সিলসিলার সাথে সম্পৃক্ত
বলেই এমন হয়, কারণটি মোটেও তা নয়।
জানার পরিধি স্বল্প হলেও হৃদয়ের
পরিধি অতো ছোট নয় বলেই মানবতার
কাছে হাঁটুগেড়ে বসে থাকতে ইচ্ছা
করে সব সময়। মানবতার উজ্জল ছবিগুলো
দেখে মানুষেরা আপ্লুত হবে, সেটিই
স্বাভাবিক।
মানুষকে শুধু মানুষ হিসেবে
ভালোবাসার যে সিলসিলা শুরু
করেছিলেন মানবদরদী মহান পুরুষ
আল্লামা ছাহেব কিবলা ফুলতলী
রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, সেই
ধারাবাহিকতাকে আরও বিস্তৃত
পরিসরে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁরই
সুযোগ্য উত্তরাধীকার হযরত আল্লামা
ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলা
ফুলতলী (দা:বা)। বিশাল বাড়িটির
চারপাশ ঘিরে ভালোবাসা, হৃদ্যতার
সুস্পষ্ট ছাপ। হাজারও এতিমের
হাস্যোজ্জল মুখ; লঙ্গরখানা ঘিরে
ক্ষুধার্ত মানুষের তৃপ্তির আহার;
সারিবদ্ধ অসহায় দরিদ্র মানুষের চোখে
মুখে কিছু একটা প্রাপ্তির আনন্দ,
মানবজন্মের মাহাত্ম গেয়ে যায়।
'অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ' কিংবা
'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি' যখন
ব্যবসায়িক শ্লোগানে পরিণত হয়েছে,
তখন সত্যিকারের 'অসাম্প্রদায়িক
বাংলাদেশের' এক উজ্জল নমুনা হয়ে
আছে একটি বাড়ি, ফুলতলী ছাহেব
বাড়ি। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব
কিবলা রাহমাতুল্লাহি আলাইহির
ইন্তেকালের পর অসংখ্য হিন্দু
ধর্মাবলম্বির জলভেজা চোখ বলে
দিয়েছিলো 'মানবজন্ম কী করে সার্থক
হয়'। জনৈক দরিদ্র হিন্দু প্রতিবেশি তার
বাবার মৃত্যুর পর শেষকৃত্য করার মতো
সামর্থ না থাকার কথা যখন ফুলতলী
রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে
বলেছিলো, ফুলতলী রাহমাতুল্লাহি
আলাইহি তাকে বলেছিলেন, আমার
বাড়ি থেকে তোমার পছন্দমত একটি
গাছ কেঁটে নিয়ে যাও, তোমার কাজ
সম্পন্ন করো। আজকের এই আধুনিক
সভ্যতায়ও এমন দৃষ্টান্ত বিরল।
আমি আমন্ত্রণ জানাই সকল
মানবতাবাদী মানুষকে, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র
নির্বিশেষে সবাইকে, বিশেষ করে
কবিদের কে আমন্ত্রণ- ঘুরে যান ফুলতলী
ছাহেব বাড়ি, এইখানে সহজেই
কবিতারা নামে...।